শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : টানা ১০ ওয়ানডেতে হার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও জয় দেখেনি পাকিস্তান। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বেশ বাজে সময় পার করা দলটি আজ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে। নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে তাদের প্রতিপক্ষ ব্যাটিং শক্তিতে বলীয়ান ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইন্ডিজদের বিপক্ষে নামার আগে পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ সরফরাজ বলেন, ‘আমাদের প্রেরণা ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তখনো আমাদের অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। টুর্নামেন্টের আগে ক্রমাগত হারছিলাম।’ অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অলরাউন্ডার কালোস ব্রেথওয়েট বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে আমরা ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের ট্রফিজয়ী দলের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারি।’
দুই বছর আগে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। র্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম দল হিসেবে ওই আসরে খেলার সুযোগ পায় তারা।
টুর্নামেন্টের আগে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল পাকিস্তান। এরপর আসরের প্রথম ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ১২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় সরফরাজ আহমেদের দল। কিন্তু এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ জিতে উঠে যায় সেমিফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। কিন্তু আগের ম্যাচগুলোতে দুর্দান্ত খেলা ইংল্যান্ড পাত্তাই পায়নি পাকিস্তানের কাছে। মরগান-রুটদের ৮ উইকেটে হারিয়ে সরফরাজরা উঠে যায় ফাইনালে। পরের ঘটনা তো প্রায় সবারই জানা। গ্রুপ পর্বে যাদের কাছে হেরেছিল, সেই ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে নেয় পাকিস্তান।
ইংল্যান্ডে বেশ আগেই পা রেখেছে পাকিস্তান। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে স্বাগতিক দলে সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে তারা। সবকটিতেই হারে পাকিস্তান (বৃষ্টিতে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়)। তবে ওসব নিয়ে ভাবছেন না সরফরাজ। তিনি বলেন, ‘আগে কী হয়েছে না হয়েছে ওসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছে ছেলেরা। নব উদ্যমে মাঠে নামবে তারা। ইংল্যান্ডে আমরা প্রায় এক মাস ধরে আছি। আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। আশা করি, পাকিস্তানের কাছ থেকে ভালো ক্রিকেট দেখতে পাবেন।’ প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিংটা ভালোই হয়েছে পাকিস্তানের। ৪ ওয়ানডের ৩টিতে ৩০০’র চেয়ে বেশি দলীয় স্কোর করেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি হাঁকান বাবর আজম, ইমাম-উল-হক। টপ অর্ডার ও মিডঅর্ডারের অন্য ব্যাটসম্যানরাও রান পেয়েছেন। ব্যাটসম্যানরা নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটা খেলতে পারলে আজ ট্রেন্ট ব্রিজের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বড় স্কোরই পাবে পাকিস্তান। এরপরও দুশ্চিন্তা থাকবে পাকিস্তান শিবিরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপই এর কারণ। প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২১ রান তুলে উইন্ডিজ দেখিয়েছে তাদের ব্যাটিং শক্তি। ক্যারিবীয়দের টপ অর্ডার রয়েছে দারুণ ফর্মে। ওপেনার ক্রিস গেইল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত হোম সিরিজে ৪ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ২ হাফসেঞ্চুরি হাঁকান। আরেক ওপেনার শেই হোপ চলতি মাসের শুরুতে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করেন। প্রস্তুতি ম্যাচেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। রান পেয়েছেন আলোচিত ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেলও। ২৫ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। আর গত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই রাসেলই ছিলেন উইন্ডিজের জয়ের নায়ক। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ১৩ বলে ৪২ রান করার পর বল হাতে ৩ উইকেট নেন রাসেল। ম্যাচটিতে পাকিস্তানকে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে হারায় ক্যারিবীয়রা। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড বেশ ভালো। ১০ ম্যাচে ৭ জয়। ১৯৭৯ বিশ্বকাপে প্রথমবার সাক্ষাৎ হয় দুদলের। সেবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ১ উইকেটে জেতে উইন্ডিজ। পরের দুটো আসরেরই সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারায় তারা। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে দুবার মুখোমুখি হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান। একবার করে জিতেছে উভয় দল। ১৯৯২ বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন লীগে পাকিস্তানের ২২১ রানে লক্ষ্য ১০ উইকেট হাতে রেখে টপকে গিয়েছিল ডেসমন্স হেইন্স-ব্রায়ান লারার দল। ১৯৯৬ সালে মুখোমুখি হয়নি তারা। পরের আসরের গ্রুপ পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। এরপর ২০০৭ সালের গ্রুপ পর্বে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত লড়াইয়ে ইনজামাম-উল-হকের দলকে ৫৪ রানে পরাজিত করেছিল লারা-সারওয়ানরা। ২০১১ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে আবার পাকিস্তান জিতেছিল ১০ উইকেটে।
ওয়ানডেতে মুখোমুখি: ১৩৩
পাকিস্তান জয়: ৩০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়: ৭০
টাই: ৩
বিশ্বকাপে মুখোমুখি: ১০
পাকিস্তান জয়: ৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়: ৭